জীর্ণ ইতিহাস

রাত্রি শেষ তবু, বিমূর্ত বেদনারা এখানেই জমে থাকে
সুর তুলে ঝিঁঝিঁরা ডাকে

শিশিরেরা ঝরে টুপটাপ ঝুপঝাপ নিয়ম করে রোজ
তবু আমি নিখোঁজ

হেথায় রয়ে গেছে আমার না বলা কথা, চাপা আর্তনাদ
বুকেতে করুণ নিনাদ

এই ইট, কাঠ, পাথরের ফাঁকে ফাঁকে, শ্যাওলামাখা বুনো স্মৃতিরা ডাকে অবিরল
অঝোরে ঝরে নোনাজল

একদিন ঠিক তুমি আসবেই জানতাম মনে মনে
নিভৃতে সঙ্গোপনে

সেদিন কেউ ডাক শুনবে না ছলকাবে না জলও কোনো
কান পেতে শোনো

অচেনারা খুব আসে, করুণ কণ্ঠে কান্নার আওয়াজ ভাসে
আমার ব্যাথার উল্লাসে

আমারে ডাইনি বলে, রাক্ষসী বলে, কেউ বলে অশরীরী
ডুকরে ওঠে শর্বরী

শিউলি ঝরে, গোলাপ ঝরে, ঝরে রোজ কত নামহারা ফুল
ঝরেনি শুধু তোমার ভুল

শ্বাসরোধে এখানেই রেখে গেছো
বারো বছরের চাপা ইতিহাস
সাক্ষী ঐ মহাকাশ

আমি কৃষ্ণ বর্ণ, অসুন্দর তবু কুৎসিত তো ছিলাম না একেবারে
শেষ করে দিলে চিরতরে

সমগ্র পৃথিবী ঘুমায় তবু, আমি জোনাকির সাথে জেগে থাকা নিশাচরী
নিকষ, গুমোট বিভাবরী

শুধু আমাকেই হত্যা করোনি,
তোমার নৃশংসতার বলি
আমার গর্ভজাত সন্তান
পাপ কি দেবে পরিত্রাণ?

এখন তুমি নিয়ম করে আসো এখানে, এতো অনুশোচনা এতো অনুতাপ
লোকে বলে পাগল তুমি, বকছো প্রলাপ

একটুও ভালবাসোনি কখনো আমাকে, এসেছিলে কাছে দিয়েছো অবহেলায় ঔরসজাত
আমার নিষ্পাপ পারিজাত

আমি মরে গিয়েও বেঁচে আছি নক্ষত্রের সাথে থরে থরে
আমার অকূলে তবু মিশে আছো কেন?
এ বিদীর্ণ পিঞ্জরে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here