গোধূলি লগন

হলুদের দাগ লেগে আছে এমন পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে কনে দেখতে যাওয়া যায় না। সিফাত আবারও ভ্রু কুঁচকে আয়নার দিকে তাকাল। কাঁধের কাছে একটা হলদে দাগ ভয়াবহভাবে ফুটে আছে। তার উচিত এটা বদলে নতুন একটা পাঞ্জাবি পরা। সেটি সম্ভব না। তার এই একটাই পাঞ্জাবি।

সিফাত পাঞ্জাবি খুলে ফেলল। যেখানে দাগ লেগেছে সেখানে খানিকটা লেবু ঘষে নিল। কার কাছে যেন শুনেছিল লেবুর রসে হলুদ দাগ সহজেই উঠে যায়। পরীক্ষা করে দেখা যাক। লেবুর রসের গুনাগুণ পাওয়া গেল সাথে সাথেই। এবারে দাগ আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যে লোক চশমা ছাড়া কিছু চোখে দেখে না সেও এই দাগ সহজেই দেখতে পাবে।

সিফাত গলার স্বর যতটা সম্ভব নরম করে রুমমেটকে বলল, “শফিক তোর নীল পাঞ্জাবিটা ইস্ত্রি করা আছে?”
শফিক একটা হাফ প্যান্ট পরে প্রায় অর্ধ উলঙ্গ হয়ে পত্রিকা পড়ছিল। সে মুখ না তুলেই বলল, “ একটা চাকরির খবর পড়তেছি। বিরক্ত করিস না।”

সিফাত ওর পাশে বসল। কাতর গলায় বলল, “দোস্ত মেয়েটা একটা দামি রেস্টুরেন্টে আসবে। এই পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে কীভাবে যাই! এই হলুদ দাগ দেখলেই তো আমাকে রিজেক্ট করে দিবে।”
এবারে শফিক উঠে বসল। শান্ত গলায় বলল, “তুই এই দাগওয়ালা পাঞ্জাবি পরেই যাবি। তাহলেই মেয়েটা তোকে পছন্দ করবে।”
“মানে?”
“মানে বুঝিয়ে বলছি শোন। তুই মাত্র বিশ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি করিস। থাকিস এই সস্তা মেসে। তোর চেহারাটাও বলদ টাইপ। তোকে কোনো মেয়েই পছন্দ করবে না। কিন্তু মেয়েটা যখন দেখবে তোর পাঞ্জাবির এই দশা তখন মেয়েটার মনে তোর জন্য করুণা হবে। করুণা থেকে মায়া। যেহেতু মায়া ভালোবাসার অংশ। সুতরাং সূক্ষ্ম একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে। এতে যদি মেয়েটা তোকে বিয়ে করতে রাজি হয়।”

সিফাত মুখ গোমড়া করে পাঞ্জাবিটা গায়ে দিল। শফিকের গালে বাম হাত দিয়ে একটা চড় দিতে পারলে মনটা শান্ত হতো। ওর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কিল ঘুষি দিতে ইচ্ছা করছে। সেটা এখন সম্ভব না। সিফাত মাত্র গোসল করে এসেছে। আঁচড়ানো চুল নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।

সিফাত বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর মেয়েটা এল। সিফাতকে বলা হয়েছিল মেয়েটা আহামরি সুন্দরী না। গায়ের রং ময়লা। বাস্তবে দেখা গেল এর পুরোপুরি উল্টো। কালো শাড়িতে মেয়েটাকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে এক টুকরো কালো মেঘ যেন আকাশ থেকে নিচে নেমে এসেছে। এত সুন্দর কোনো মেয়ে সিফাত আগে দেখেছে কিনা মনে করতে পারল না।

মেয়েটা খুব সহজ স্বরে বলল, “আমি অদ্রি। আপনি সিফাত?”
“জি।”
“আমাকে দেখে আপনি উঠে দাঁড়িয়েছেন কেন? বসুন। সরি আসতে একটু দেরি হয়ে গেল।”

সিফাতের গলা শুকিয়ে গেল। মেয়েটার সামনে ঢকঢক করে পানি খাওয়াটাও নিশ্চয়ই ঠিক হবে না। সে বিরক্ত হতে পারে। সিফাতের অস্বস্তি লাগার আরও একটা কারণ এত দামি রেস্টুরেন্টে সে আগে কখনো আসেনি। তাছাড়া মেয়েটা এত সুন্দর করে সেজে এসেছে অথচ সে এসেছে কটকটে বেগুনি রঙের পাঞ্জাবি পরে। পাঞ্জাবির দাগটার কথা মনে পড়তেই সিফাত মনে মনে বলল- আল্লাহ, মান ইজ্জত রাখার মালিক তুমি।

অদ্রি বলল, “আপনি এমন চুপ করে আছেন কেন? মেয়ে দেখতে এসেছেন নিশ্চয়ই কাল সারারাত ভেবে ঠিক করে রেখেছেন আমাকে কী কী প্রশ্ন করবেন। প্রশ্ন করা শুরু করুন। তার আগে আপনি একটু পানি খেয়ে নিন। আপনার মুখ দেখে মনে হচ্ছে আপনার পিপাসা পেয়েছে।”

সিফাত ব্যাস্ত ভঙ্গিতে গ্লাস হাতে নিল। পানি খেতে গিয়ে পাঞ্জাবির বুকের দিকটা ভিজিয়ে ফেলল। সিফাত অদ্রির দিকে তাকিয়ে লাজুক ভঙ্গিতে হাসল। এমন পরিস্থিতিতে পরতে হবে কে জানতো। পানি খেয়ে সিফাত আবারও চুপ হয়ে গেল।

অদ্রি বলল, “আমাকে আপনার পছন্দ হয়েছে?”
সিফাত মিনমিন করে বলল, “জি।”
“আমার ফ্যামিলি সম্পর্কে সব নিশ্চয়ই জেনেছেন।”
“জি, আমার চাচা সব বলেছে।”
“আপনি আমাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করছেন না কেন? কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করুন।”
“আচ্ছা, লেবুর রসে নাকি হলুদের দাগ উঠে। এটা কি সত্য?” মেয়েটা আলতো করে হাসলো। সিফাতের মনে হল জগতের সবচেয়ে সুন্দর হাসিটি সে দেখে ফেলল।
“হ্যাঁ, লেবুর রসে দাগ উঠে। কিন্তু রস লাগিয়ে কিছুক্ষণ রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। আর শুনুন আপনি পাঞ্জাবির দাগ নিয়ে মোটেও অস্বস্তি বোধ করবেন না। এই পাঞ্জাবিটাতে আপনাকে মানিয়েছে। সুন্দর লাগছে।”
“থ্যাংক ইউ।”
“আপনার এই একটাই পাঞ্জাবি?”
“ হ্যাঁ, আমি ধুয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু আমার ফ্রেন্ড গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গিয়ে দাগ লাগিয়ে এনেছে। আজ ওর পাঞ্জাবিটা চাইলাম। দিল না।”
“পাঞ্জাবি প্রসঙ্গটা আপাতত থাক। আমরা খাবার অর্ডার করে ফেলি।”

পুরো সময় সিফাত চুপচাপ খাবার খেল। সে আসলেই বেশ কিছু কথা গুছিয়ে রেখেছিল। কিন্তু এখন কিছুই মনে পড়ছে না। শুধু মনে হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখছে। তার মতো একটা ছেলের সাথে এত সুন্দরী একটা মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে এটা বাস্তবে হওয়া প্রায় অসম্ভব।

খাওয়া যখন প্রায় শেষ অদ্রি বলল, “আচ্ছা আপনার কোনো রিলেশনশিপ ছিল না?”
“জি না। আমার জীবন কেটেছে স্ট্রাগল করে। প্রেম করার সুযোগ ছিল না।”
“এই প্রশ্নটা আপনি আমাকে করছেন না কেন?”
“আমার জানতে ইচ্ছা করছে না।”
“আপনার জানার ইচ্ছা না থাকলেও আমাকে বলতে হবে। আমি আপনাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলবো। আপনি মন দিয়ে শুনবেন। একনাগাড়ে বলে যাব। কথার মাঝখানে কোনো প্রশ্ন করবেন না।”
“আপনার রিলেশন ছিল?”
“নাহ। আমিও সেই সুযোগ পাইনি। দেখতেই পাচ্ছেন আমাকে সুন্দরী বলা যায়। অনার্সে ভর্তির পরই আমার বিয়ের সমন্ধ আসতে থাকে। আমার পরিবারও একের পর এক ছেলে দেখা শুরু করে। এর মধ্যে একটা ছেলেকে আমাদের সবাই খুবই পছন্দ করে ফেলে। তার কথাই এখন আপনাকে বলবো।”
“আচ্ছা বলুন।”
“ছেলের নাম রবিন। সে আমেরিকায় থাকে। দেশে এসেছে বিয়ে করার জন্য। তো একদিন রবিনের সাথে আমার দেখা হলো। এমন একটা রেস্টুরেন্টে আমরা বসলাম। সে আপনার মতো খালি হাতে আসেনি। হাত ভর্তি গোলাপ নিয়ে এল। সাথে অনেকগুলো গিফট। রবিনের চেহারা সুন্দর, কথাবার্তাও বেশ গোছানো। সে মজার মজার কথা বলে আমাকে হাসাতে শুরু করল। মানুষকে মুগ্ধ করার আশ্চর্য রকম ক্ষমতা আছে তার। রেস্টুরেন্ট থেকে উঠে চলে আসবো এমন সময় সবার সামনে আমাকে হাঁটু গেড়ে প্রপোজ করে ফেলল। তার হাতে তখন ডায়মন্ডের একটা রিং। বুঝতেই পারছেন আমি কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিলাম কিন্তু আনন্দে আমার চোখে জল চলে এল। রবিনের বড় মামা থাকেন অস্ট্রেলিয়াতে। ঠিক হলো পরের মাসে তিনি দেশে আসলেই আমাদের বিয়ের আয়োজন শুরু হবে। এদিকে রবিনকে আমার বাসার সবাই এতটাই পছন্দ করে ফেলল যে সে অল্প সময়ের মধ্যেই আমার ঘরের মানুষ হয়ে উঠল। বাবার চোখের অপারেশন হবে সে সারা রাত হাসপাতালে জেগে রইল। বাবা-মা দুইজনই তার ব্যবহারে মুগ্ধ। রবিন যখন তখন আমাদের বাসায় আসতো। রাত দুপুরে বিশাল সাইজের মাছ এনে মাকে বলতো, “আন্টি ভালো করে ভেজে ফেলুন। আপনার হাতের মাছ ভাজা খাওয়ার জন্য আমাকে প্রতি মাসেই একবার বাংলাদেশে আসতে হবে।” এমন আন্তরিকভাবে মিশে যাওয়ার ক্ষমতাটাই তাকে সবার কাছে প্রিয় করে তুলল।

তো একদিন আমার চাচাতো বোনের বিয়েতে আব্বু আম্মু ছোটভাই সবাই নারায়ণগঞ্জ গিয়েছে। ফিরতে রাত হবে। আমি যেতে পারলাম না কারণ আমার জ্বর জ্বর লাগছিল। দুপুর বেলা কিছু না বলেই রবিন বড় সাইজের চিংড়ি নিয়ে এল। বাসায় কেউ নেই শুনেই বেচারার মন খারাপ হয়ে গেল। এদিকে আমার জ্বর। আমাকে অসুস্থ অবস্থায় রেখে তারা কেন বিয়ে খেতে গেল এটা নিয়ে সে বেশ চিন্তিত। আমি রবিনকে বসতে বললাম সে বসল না। নিজে আমার জন্য কফি বানিয়ে দিয়ে বের হয়ে গেল। তার ঠিক পনেরো-বিশ মিনিট পর কী মনে করে সে আবার ফিরে এল। সহজ ভঙ্গিতে বলল, “তোমার জ্বর কি অনেক বেশি। আমি কি গায়ে হাত দিয়ে দেখবো?” তার গলার স্বরে অন্য কিছু ছিল। বুঝতেই পারছেন আমিও তখন তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি। আমি তাকে ভেতরে নিয়ে যাই। সন্ধ্যা পর্যন্ত সে আমার সাথে রইল। আপনি কি আমার কথা শুনছেন?”

সিফাত কিছু বলল না। তার চিন্তাভাবনা এলোমেলো হয়ে আসছে। বলার মতো কিছু আসলেই আছে কিনা সে বুঝতে পারছে না।

অদ্রি বলল, “ঐ দিনই প্রথম। কিন্তু শেষ না। একের পরই আসে দুই। সে সুযোগ পেলেই আমার কাছে চলে আসতো। আমি তাকে কখনো নিরাশ করিনি। তার চোখ খুবই সুন্দর ছিল। বিশ্বাস করার মতো।”
“বিয়েটা হলো না কেন?”
“ওর মামা এসে বললেন আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের সাথে তিনি আত্মীয়তা করতে চান না। তিনি রবিনকে আমেরিকা পাঠিয়ে দিলেন।”
“রবিন যোগাযোগ করেনি?”
“করেছে। টেলিফোন করে কান্নাকাটি করতো। বলতো কিছুদিন যেন অপেক্ষা করি। সে সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। আবার দেশে ফিরেই আমাকে বিয়ে করবে।”
“তারপর?”
“আমি অপেক্ষা করলাম। আস্তে আস্তে যোগাযোগ কমে গেল। গত এপ্রিলে শুনলাম ওখানেই এক প্রবাসীকে বিয়ে করেছে। রবিন হয়তো অপরাধবোধে কষ্ট পাচ্ছিল। আমার যাতে ভালো একটা বিয়ে হয় সেজন্য সে আমার নামে পাঁচ হাজার ডলার পাঠিয়ে দেয়। আমি টাকাটা নিতে চাইনি। কিন্তু বাবা টাকাটা রেখে দেয়। এরপর আমার জন্য আবার ছেলে দেখা শুরু হয়। কিন্তু আমার বিয়ে হচ্ছে না। কারণ আমি যেই ছেলের সাথেই দেখা করি তাকে সত্যটা বলে দেই।”
“আপনি তো চাইলেই গোপন করতে পারেন।”
“নাহ, বিয়ে অনেক বড় একটা ব্যাপার। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সেই অধ্যায়ের শুরুটা মিথ্যা দিয়ে হোক তা আমি চাই না।”
“কোনো ছেলেই রাজি হয়নি?”
“নাহ। কেনই বা হবে? সবাই এমন ফুল চায় যে ফুলের গন্ধ আগে কেউ শুকে দেখেনি। আমার এই ঘটনা শুনে সবাই সমবেদনা জানায়। কিন্তু বিয়ে করতে রাজি হয় না। অতি সাবধানে পিছিয়ে যায়। আঁড়ালে গিয়ে মজা করে বলে ইউজড প্রডাক্ট। এই যে আপনি অল্প বেতনের চাকরি করেন। আপনি দেখতেও বোকা টাইপ। আপনি নিশ্চয়ই আশা করেননি আমার মতো সুন্দরী একটা মেয়েকে আপনি বিয়ে করতে পারবেন। অথচ এখন আপনিই আমাকে বিয়ে করবেন না। আমাকে প্রথম দেখে আপনার চোখে মুখে মুগ্ধতা ছড়িয়ে পরেছিল। এখন তা নেই। তার বদলে হয়তো ঘৃণা করা শুরু করেছেন আমাকে।”
“নাহ নাহ। আপনি এভাবে ভাবছেন কেন?”
“কীভাবে ভাবছি? আপনিতো সব জানলেন। এখন আমাকে বিয়ে করতে রাজি হবেন আপনি?”

সিফাত মাথা নিচু করে রইল। মেয়েটির কথা সত্যি। মেয়েটার জন্য খারাপ লাগছে কিন্তু তাকে বিয়ে করার মতো সাহস সিফাতের নেই।

অদ্রি বলল, “এই রেস্টুরেন্টটা এক্সপেন্সিভ। অনেক টাকা বিল হয়েছে। বিলটা আমি দিয়ে দিচ্ছি। আপনি সহজ সরল মানুষ। আপনি আর সবার মতো আমাকে কোনো মিথ্যে সান্ত্বনা দেননি। আপনাকে আমার ভালো লেগেছে। আমি চাচ্ছি না আমার মতো একটা মেয়ের জন্য আপনার কিছু টাকা নষ্ট হোক।”

বিল দিয়ে মেয়েটা উঠে দাঁড়ালো। সিফাত লক্ষ্য করল পুরো সময় বেশ স্বাভাবিকভাবে কথা বললেও এবারে মেয়েটার চোখের কোণে মেঘ জমতে শুরু করেছে। সে সিফাতের দিকে এখন আর একবারও তাকাচ্ছে না। সে কারো সামনে কাঁদতে চায় না। তবে সিফাত নিশ্চিত রিকশায় উঠেই সে কাঁদতে শুরু করবে। মেয়েটা দ্রুত লিফটের দিকে রওনা হলো। সে হয়তো প্রতিটা ছেলেকেই খুব আশা নিয়ে তার জীবনের এই করুণ ঘটনাটা বলে। মেয়েটা এক ভীষণ মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে বাস করছে। সে মনে মনে আশা করে কেউ হয়তো তাকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিবে। মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে বলবে- “এটা একটা দুর্ঘটনা ছিল। আজ থেকে আমি আছি তোমার পাশে। অতীতের কারো জন্য যেন তোমার চোখে জল না আসে।”

কিন্তু বাস্তবে এমনটা হয় না। প্রতিবারই অদ্রি কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফেরে।

শেষ বিকেলের গল্প…

বড় মায়াময় সময়। সারাদিনের ক্লান্ত সূর্যটা সন্ধ্যের চাদরে নিজেকে লুকাতে ব্যস্ত। পশ্চিমাকাশে সোনালি আভা ছড়িয়ে পড়ছে। ঘুমটি মেরে অন্ধকার অপেক্ষা করছে দিনের শেষ আলোটুকুকে গ্রাস করে নিতে। ব্যস্ত শহরের একঘেয়েমি কোলাহলও এই সময়টাতে শুনতে খারাপ লাগে না। শহরের শত শব্দের মধ্যেও দূর থেকে পাখির কিচিরমিচির শব্দ কানে আসে। তারা শান্ত ডানায় ঘরে ফিরে যাচ্ছে। বেলা ফুরাবার এমন ক্ষণ শুধুই আনন্দের। এমন ক্ষণে সকল দুঃখ, কষ্ট, বিষাদ ভুলে যেতে হয়।

সিফাতের মাথার ভেতর একটা ভোঁতা যন্ত্রণা হচ্ছে। লিফট নেমে গেছে আগেই। সিফাত দ্রুত সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামছে। মেয়েটাকে থামাতে হবে। এমন গোধূলি লগনে কারো মন খারাপ করে ফিরতে নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here